বরগুনার আমতলীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক কিশোরীকে (১৬) একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগে ভন্ড কবিরাজ মনসুর শিকদারকে (২৮) গ্রেফতার করেছে র্যাব। গতকাল (শনিবার) সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৌরসভার মাজার রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব- ৮ (পটুয়াখালী ক্যাম্পের) একটি অভিযানিক দল। এ ঘটনায় ধর্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের ও ভিকটিম কিশোরীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
র্যাব ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানাগেছে, ভিকটিম কিশোরীর মায়ের অসুস্থতার কারণে ভন্ড কবিরাজ ধর্ষক মনসুর শিকদার কিশোরীর মাকে কবিরাজি চিকিৎসা করতে গিয়ে তাদের পরিবারের সাথে পরিচয় ঘটে। সেই সূত্রে ওই ভন্ড কবিরাজ ভূক্তভোগী ভিকটিম কিশোরীর সাথে কৌশলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত ২৮ মার্চ ভিকটিম তার মাকে দেখতে যাওয়ার পথে উপজেলার সাহেববাড়ী বাসস্ট্যান্ডে বসে ভন্ড কবিরাজ মনসুর শিকদারের সাথে দেখা হয়। এসময় ওই ভন্ড কবিরাজ কৌশলে কিশোরীকে ভুল বুঝাইয়া ও বিয়ের প্রলোভন দেখাইয়া তার এক আত্মীয়ের বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানে দুই দিন আটক রেখে ভিকটিম কিশোরীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে কয়েক দফা ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে সেখান থেকে নিয়ে এসে আমতলী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সোবহানের বাসায় বেশ কিছুদিন আটক রেখে কিশোরীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করে। কিছুদিন পর সংবাদ পেয়ে সেখান থেকে তার বড় বোন ওই ভিকটিম কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এরপর গত ১৬ নভেম্বর পুনঃরায় ভিকটিম কিশোরী তার মাকে দেখতে যাওয়ার পথে একই বাসস্ট্যান্ডে নেমে অন্য গাড়ীতে উঠার অপেক্ষমান থাকায় ভন্ড কবিরাজ মনসুর শিকদার সেখানে গিয়ে তাকে একই কায়দায় ভুল বুঝাইয়া পূর্বের সেই সোবহানের বাসায় নিয়ে ২ দিন আটক রাখিয়া তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে।
পরবর্তীতে ভূক্তভোগী ভিকটিম কিশোরী কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে এসে আইনগত সহায়তা চেয়ে র্যাব- ৮ (পটুয়াখালী ক্যাম্পে) আবেদন করে। র্যাব- ৮ সিপিসি- ১ (পটুয়াখালী ক্যাম্পে) একটি বিশেষ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত ধর্ষক ভন্ড কবিরাজ মনসুর শিকদারকে পৌরসভার মাজার রোড থেকে আটক করে। গ্রেফতারকৃত ভন্ড কবিরাজ মনসুর শিকদার উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের কাঠালিয়া (কুলুরচর) গ্রামের আঃ রব শিকদারের পুত্র।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ভন্ড কবিরাজ মনসুর শিকদার ঘটনার সাথে নিজের সং¯িøষ্টতার কথা র্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন বলে র্যাবের একটি সূত্র জানিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত ভন্ড কবিরাজকে গতকাল (শনিবার) রাতেই আমতলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ওই ভূক্তভোগী ওই নারী ভিকটিমের বড় বোন বাদী হয়ে আমতলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এছাড়া মাজার রোড এলাকার একটি বিশ্বস্থ সূত্র থেকে জানাগেছে, এই ভন্ড কবিরাজ মনসুর শিকদার খুবই দুর্দান্ত ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক, তার স্ত্রী ও সন্তানও রয়েছে, সে দীর্ঘদিন ধরে কবিরাজি চিকিৎসার আড়ালে একইভাবে অনেক মেয়েদের সর্বনাশ করে আসছে।
ভিকটিম কিশোরীটি বলেন, আমার সাথে কৌশলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে ওই ভন্ড কবিরাজ মনসুর শিকদার বিয়ের প্রলোভনে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছেন। আমি এর বিচার চাই।
আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহআলম হাওলাদার বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। র্যাব কর্তৃক ধৃত আসামীকে আজ দুপুরের পরে আদালতে প্রেরণ করা হবে ও ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।