জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পাররামরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিন মোয়ামারী গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের নির্মানাধীন লাইনের সংযোগ দেয়ার নামে ২৫০ জন গ্রামবাসীর কাছ থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগি এলাকাবাসির অভিযোগ,স্থানীয় একটি চক্রের মাধ্যমে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কতিপয় কর্মকর্তা ও লাইন নির্মাণকারী ঠিকাদার এই টাকা হাতিয়ে নিলেও এখন পর্যন্ত সংযোগ পায়নি গ্রামবাসীরা।
টাকা আদায়কারী চক্রের মুল হোতা মাওলানা মোঃ আনিছুর রহামন সংযোগ গ্রহণকারীদের কাছ থেকে এসব টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গ্রামের লোকজনদের সাথে আলোচনা করেই তিনি টাকা উত্তোলন করে ঠিকাদার ও পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের দিয়েছেন। তবে দালাল চক্রের মাধ্যমে এলাকাবাসীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন জামালপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) (বকশীগঞ্জ) আক্তারুজ্জামান।
জানা গেছে, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ মোয়ামারী গ্রামে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌনে ৪ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এই লাইনের মাধ্যমে ১৭০ জন আবাসিক গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। আর এই এলাকাটি জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বকসিগঞ্জ ডিজিএম অফিসের অধিনে।
অভিযোগ রয়েছে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বকশীগঞ্জ অঞ্চলের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও লাইন নির্মাণকারি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের রনি তিনি এলাকার একটি দালাল চক্রের মাধ্যম্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে প্রতিটি আবাসিক গ্রাহককের কাছ থেকে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ২৫০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ দিন যাবত এলাকাবাসির কাছে মোটা অঙ্করে টাকা হাতিয়ে নিলেও বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছেন না তারা। এ কারণে এলাকাবাসীদের পক্ষে জামালপুরের জেলা প্রশাসক ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি অভিযোগ করেছেন এলাকাবসি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দক্ষিন মোয়ামারী গ্রামে গিয়ে জানাযায়, প্রতিটি সংযোগ দিতে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৪ থেকে ৫ হাজার করে টাকা নিয়েছে এলাকার বাসিন্দা মাওলানা মোঃ আনিছুর রহামন। মাওলানা মোঃ আনিছুর রহামন বলেন,পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারকে টাকা দিয়েছি এখন আবারও টাকা দাবি করছেন তারা।
ভুক্তভোগি এলাকাবাসী মোঃ আব্দুল মান্নান, ফেরদৌস, বাবুল, আমির হোসেন রহিম, সৈয়দ আলী রশিদসহ শতাধিক ব্যক্তি জানায় অনেক দিন হয় টাকা নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছে না। তাই তারা বিদ্যুৎ সংযোগেরর নামে ঘুষ নেয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করায় বর্তমানে তড়িগড়ি করে সীমিত আকারে সংযোগ দেয়ার পায়তারা করছে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
এবিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের রনির সাথে যোগাযোগ করে না পেয়ে জামালপুর বকশীগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আক্তারুজ্জামানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি গ্রাহকদের কাছে টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, অনেক দিন আগেই এই বিদ্যুৎ লাইনের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এলাকায় দ্বন্দ্বের কারণে গ্রাহকদের সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে সংযোগ দেয়ার নামে টাকা নেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।